তারিখ: ২৩ অক্টোবর, ২০২৫
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
শ্রমিক অধিকার সুরক্ষায় ঐতিহাসিক পদক্ষেপ: আইএলও সনদ স্বাক্ষরকে স্বাগত জানাচ্ছে ব্লাস্ট
২২ অক্টোবর ২০২৫ইং তারিখে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন আই এল ও (আর্ন্তজাতিক শ্রম সংস্থা) এর ৩ টি সনদ যথাক্রমে পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক আইএলও সনদ ১৫৫, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মান উন্নয়নে প্রচারণামূলক কাঠামো সনদ ১৮৭ এবং কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধ বিষয়ক সনদ ১৯০ অনুসমর্থন পত্রে স্বাক্ষর করেন। অত্র ঐতিহাসিক পদক্ষেপকে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাচ্ছে।
ব্লাস্টের পরিচালক (আইন) জনাব মোঃ বরকত আলী এ বিষয়ে বলেছেন, “পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিতের ক্ষেত্রে এবং সহিংসতামুক্ত কর্মপরিবেশের লক্ষ্যে আইএল সনদসমূহের অনুসমর্থন পত্রে স্বাক্ষরকে স্বাগত জানাই।বর্তমানে অত্র সনদসমূহ অনুসারে আমাদের দেশের আইন ও নীতিসমূহকে প্রয়োজনীয় বিশ্লেষন করতে হবে যাতে সকল শ্রমিকদের পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিত হবে এবং হয়রানি মুক্ত পরিবেশে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল শ্রমিক নিরাপদ কর্মক্ষেত্রে কাজ করতে পারবেন।”
পেশাগত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক কনভেনশন, ১৯৮১ (নং-১৫৫) এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মান উন্নয়নে প্রচারণামূলক কাঠামো কনভেনশন, ২০০৬ (নং-১৮৭), আই এল ও কর্তৃক ২০২২ সালে সালে মৌলিক কনভেনশন হিসেবে ঘোষনা করা হয়েছে। অত্র পদক্ষেপের মাধ্যমে আই এল ও এর মোট ১১ টি মৌলিক কনভেনশন (১ টি প্রটোকল সহ) , সবগুলোই বাংলাদেশের পক্ষে অনুস্বাক্ষর করা সম্পন্ন হয়েছে।
পেশাগত স্বাস্থ্য ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা বিষয়ক সনদ ১৫৫ ও ১৮৭ শ্রমিকদের জন্য একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত কর্মপরিবেশে নিশ্চিতের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ছিল। এই অনুস্বাক্ষরের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকতে রপ্তানী গন্তব্যের দেশগুলি বিশেষত ইউরোপের দেশগুলির গৃহীত নতুন আইন ও নীতিমালা সমূহ প্রতিপালনের ক্ষেত্রে নতুন দ্বার তৈরি হলো। এই সনদ অনুস্বাক্ষর আমাদের শিল্প ও কর্মস্থলের নিরাপত্তা বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়ক হবে।
আই এল ও সনদ ১৯০ অনুসমর্থনের ফলে কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানিমুক্ত নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা ও শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশের মহামান্য হাইকোর্ট প্রদত্ত নির্দেশনাকে[1] শ্রম আইনে অন্তর্ভূক্ত করাসহ যৌনহয়রানি প্রতিরোধে স্বতন্ত্র আইন করার বিষয়ে জোরালো দাবী রয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে, যা সনদ ১৯০ এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই স্বাক্ষরের ফলে এ সকল উদ্যোগ আরো গতিশীল হবে।
অত্র স্বাক্ষর পরবর্তী কনভেনশনগুলোর বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমাদের দেশের বর্তমান আইনসমূহের প্রয়োজনীয় সংশোধন করা প্রয়োজন।
পটভুমি:
উল্লেখ্য যে, ব্লাস্ট দীর্ঘদিন যাবত শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ কর্মক্ষেত্র ,স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে এ সনদ সমূহ অনুসমর্থনের জন্য সরকারের কাছে দাবী করে আসছিল। বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সাথে এ বিষয়ে সভা ও কর্মশালা আয়োজনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রস্তুত করতঃ সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ে পেশ করেছে।
এছাড়াও গত ২ মার্চ ২০২৫ ইং তারিখ ব্লাস্টের পক্ষ থেকে শ্রম সংস্কার কমিশন এর নিকট বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮), বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ (সংশোধিত ২০২২) এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক আইন ও নীতিমালার সংস্কার এবং কার্যকর বাস্তবায়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করে একটি সুপারিশমালা প্রদান করে। উক্ত সুপারিশে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক আইএলও কনভেনশন ১৫৫ ও ১৮৭ এবং কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি প্রতিরোধ বিষয়ক আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থন প্রদানের বিষয়ে সুপারিশ দেয়া হয়েছে[2] ।
বার্তা প্রেরক:
কমিউনিকেশন বিভাগ, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)
ইমেইল: communication@blast.org.bd
[1]বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি (বিএনডব্লিউএলএ) বনাম বাংলাদেশ, রীট মকদ্দমা নং ৫৯১৬/২০০৮, হাইকোর্ট
বিভাগ, ১৪ মে ২০০৯ [(২০০৯), ১৪ বিএলসি, এইচসিডি, ৬৯৪
[2] শ্রম সংস্কার কমিশনের নিকট পেশ করার উদ্দেশ্যে ব্লাস্ট কর্তৃক প্রস্তুতকৃত সুপারিশমালা
