২৪ অক্টোবর ২০২৫

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে একজন নারীকে সালিশে প্রকাশ্যে মারধর এবং জোরপূর্বক বিয়ে দেয়ার বিচার বহির্ভূত অমানবিক শাস্তিতে ব্লাস্টের নিন্দা, দায়ী ব্যক্তিদের বিচার এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুসরণের দাবি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নে “অনৈতিক সম্পর্কের” অভিযোগে এক নারীকে বিচার বহির্ভূতভাবে অমানবিক শাস্তি প্রদান (মারধর এবং জোরপূর্বক অন্য পুরুষের সাথে বিয়ে) এর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছে ব্লাস্ট। একইসাথে, বিচার বহির্ভূতভাবে আরোপিত সকল ধরণের শাস্তিকে বেআইনি ঘোষণা করে এবং এ ধরণের কর্মকান্ডকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করে ২০১০ সালের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক এ ঘটনার সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছে ব্লাস্ট। একইসাথে, এ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছে ব্লাস্ট। পাশাপাশি, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হতে ভুক্তভোগীর ছবি সম্বলিত ভিডিও/কন্টেন্ট দ্রুত সরিয়ে ফেলার আবেদন জানাচ্ছে ব্লাস্ট। একইসাথে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিশেষ আবেদন জানাচ্ছে ব্লাস্ট। পাশাপাশি, বিচার বহির্ভূতভাবে আরোপিত সকল ধরণের শাস্তিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে ব্লাস্ট।

উল্লেখ্য যে, গত মঙ্গলবার ২১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউব) এ ছড়িয়ে পড়া ভিডিও চিত্র এবং ২২ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন হতে জানা যায় যে, গত ১৬ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ “অনৈতিক সম্পর্কের” অভিযোগে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে শ্রীপুর ইউনিয়নের এক নারী এবং এক ব্যক্তিকে স্থানীয় জনগণ আটক করে। পরবর্তীতে আটককৃত ঐ নারীকে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য প্রকাশ্যে তার দুই হাত বেঁধে লাঠি দিয়ে মারে, চুল ধরে টানাহেঁচড়া করে এবং গালমন্দ করে। লাঠির আঘাতে ঐ নারী চিৎকার করে বাঁচার আকুতি জানালেও তাকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসে নি। পরদিন ১৭ অক্টোবর ২০২৫ তারিখ উক্ত ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে সালিশ ডেকে সালিশে উপস্থিত সকলের এবং ভুক্তভোগী নারীর স্বামীর সিদ্ধান্তে ফোনালাপের মাধ্যমে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ করানো হয়। একইসাথে, যে ব্যক্তির সাথে উক্ত নারীকে আটক করা হয়েছিলো তার সাথে পাঁচ লক্ষ টাকা কাবিনে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়া হয়।

এভাবে একজন নারীকে বিচার বহির্ভূতভাবে শাস্তি প্রদানের ঘটনা বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭ (আইনের দৃষ্টিতে সমতা), ৩১ (আইনের আশ্রয়-লাভের অধিকার), ৩২ (জীবন ও ব্যক্তি-স্বাধীনতার অধিকার-রক্ষণ), ৩৫(৫) [নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লাঞ্ছনাকর দণ্ড বা আচরণ নিষিদ্ধ] সমূহ এবং নির্যাতন ও অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অপমানজনক আচরণ বা শাস্তি বিরোধী সনদ, ১৯৮৪ (CAT), নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ ১৯৭৯, (CEDAW) এর সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।

প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন:

কমিউনিকেশন বিভাগ, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)

ই-মেইল: communication@blast.org.bd