০৯ মার্চ ২০২৫

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

সাম্প্রতিক সময়ে উল্লেখযোগ্য হারে ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ ও ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্তসহ দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির ও ভুক্তভোগী ব্যক্তির নিরাপত্তার জোর দাবী জানাচ্ছে রেইপ ল রিফর্ম কোয়ালিশন

ধর্ষণ অপরাধে ভুক্তভোগী ব্যক্তির ন্যায় বিচার নিশ্চিতে ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট (Rape Law Reform-RLR Coalition) এর ১০ দফা দাবী বাস্তবায়নসহ নারী ও মেয়ে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যত্যয় এর ঘটনাসমূহের সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষী ব্যক্তিদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার জোরালো দাবী জানাচ্ছে কোয়ালিশন।

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ হতে দেখা যাচ্ছে, ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, ধর্ষণ পরে খুন, যৌন হয়রানী, শারীরিক নির্যাতন ও নিপীড়ন, অপহরণ এর পাশাপাশি প্রতিদিনই নারীদের ঘরের বাইরে ও অনলাইন প্লাটফর্ম সমুহে নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সম্মুখিন হতে দেখা যাচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট (Rape Law Reform Coalition: RLRC) এ ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্তসহ দোষী ব্যক্তিদের যথাযথ শাস্তি, ভুক্তভোগী নারীর নিরাপত্তাসহ জোটের ১০ দফা বাস্তবায়নের জোর দাবী জানাচ্ছে।

এভাবে নারী ও মেয়ে শিশুদের প্রতি সহিংসতা বাংলাদেশের সংবিধান, বিদ্যমান আইন বিশেষত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩); শিশু আইন ২০১৩, দণ্ডবিধি, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইনসহ নির্যাতন প্রতিরোধের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আইন ও আর্ন্তজাতিক নারীর প্রতি বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডো) অনুসারে মৌলিক অধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন।

প্রেক্ষাপট: ‘ধর্ষণ আইন সংস্কার এখনই’ সংক্রান্ত প্রচারনা শুরু হয়েছিল ২০১৮ তে যার মূখ্য উদ্দেশ্য ছিল ধর্ষণ অপরাধ প্রতিরোধে ও এ অপরাধে ভুক্তভোগী ব্যক্তির ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিদ্যমান আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর সীমাবদ্ধতা সমূহ চিহ্নিত করা এবং তা দূরীকরণের জন্যে সংস্কার সংক্রান্ত প্রস্তাবনা প্রণয়ন করা। এ প্রচারণার অংশ হিসেবে ধর্ষণ সংক্রান্ত আইন সংশোধনের ১০ দফা দাবী নিয়ে ধর্ষণ আইন সংশোধন জোট তৈরি হয়েছিল। দেশজুড়ে আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়া যৌন ও লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ এবং র্ধষণ অপরাধে ভুক্তভোগী ব্যক্তির সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে র্ধষণ আইন সংস্কার জোটের পক্ষ থেকে সমসাময়িক এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটকে বিবেচনায় নিয়ে পরিমার্জিত রূপে দাবী সমূহ নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ

স্বল্প মেয়াদি দাবী হিসেবে আইনগত সংস্কারের লক্ষ্যে জোটের পক্ষ হতে মানবাধিকার মানদন্ডের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ধর্ষণ আইনের সংস্কার; ধর্ষণের সংজ্ঞাকে বিস্তৃত করে তা বৈষম্যহীন করা; ধর্ষণের আইনে ‘পেনিট্রেশন’কে সংজ্ঞায়িত করা; ধর্ষণ অপরাধে ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং ভুক্তভোগী ব্যক্তি ও সাক্ষী সুরক্ষা আইন প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও স্বল্প মেয়াদি দাবী হিসেবে উচ্চ আদালতের রায় এবং সংশোধিত আইনের সুষ্ঠু বাস্তবায়নের বিষয় সমূহকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখানে ধর্ষণ মামলায় অভিযোগকারী র্ধষণ অপরাধে ভুক্তভোগী ব্যক্তির চরিত্রগত সাক্ষ্যের ব্যবহার সর্ম্পূণ নিষিদ্ধি করে সাক্ষ্য (সংশোধিত) আইন, ২০২২ এর ১৫১ (Indecent and scandalous questions) ও ১৪৬ (৩) (Questions lawful in cross-examination) ধারা সমূহের সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করা এবং যৌন ও লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতায় ভুক্তভোগী নারী অভিযোগকারীর উপর দুই আঙ্গুলি পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ বিষয়ক হাইকোর্টের সুস্পষ্ট নির্দেশনা সম্বলিত রায়ের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিতের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্বারা প্রয়োজনীয় কর্মকৌশল গ্রহণ এবং একইসাথে, স্বাস্থ্য সেবা, বিচার বিভাগ (বিচারক, প্রসিকিউটর, আইনজীবী) এবং বেসরকারি সংস্থার সংশ্লিষ্ট অংশিদারজনদের মধ্যে সুষ্ঠ সমন্বয় সাধন নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি স্বল্প মেয়াদি দাবী হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের লক্ষ্যে বিচার ব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জেন্ডার সংবেদনশীলতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠক্রমে সম্মতি সম্পর্কিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়াও দীর্ঘ মেয়াদী দাবীতে আইনগত সংস্কার বিষয়ে অপরাধের মাত্রা অনুসারে আনুপাতিক হারে শাস্তি নির্ধারণ এবং সাজা প্রদানের নির্দেশিকা প্রবর্তন করা এবং ধর্ষণ অপরাধে ভুক্তভোগী ব্যক্তির জন্য রাষ্ট্র পরিচালিত একটি ক্ষতিপূরণ তহবিল গঠনের সুপারিশ করেছে এ জোট।

আরো তথ্য জানতে দেখুন –

Web: https://blast.org.bd/campaigns/rape-law-reform-now/

Facebook:https://www.facebook.com/rapelawreformcoalition

Email: rlrcoalition@gmail.com

প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন

ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট এর সচিবালয়ের পক্ষে

কমিউনিকেশন বিভাগ, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)

ই-মেইল: communication@blast.org.bd

ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট ১৭টি সংগঠন এর সমন্বয়ে গঠিত এ জোটের মধ্যে রয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র, আইসিডিডিআর,বি, উইক্যান, উইমেন ফর উইমেন, একশন এইড বাংলাদেশ, এসিড সার্ভাইভারস ফাউন্ডেশন, ইয়াং উইমেন্স খ্রিষ্টিয়ান এসোসিয়েশন-ওয়াইডাব্লিউসিএ, কেয়ার বাংলাদেশ, জাস্টিস ফর অল নাও, উইমেন উইথ ডিজ্যাবিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন – ডাব্লিউডিডিএফ, নারীপক্ষ, বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, ব্র্যাক, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (সচিবালয়), মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন।