১০ মার্চ ২০২৫
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
মাগুরায় ধর্ষণ অপরাধে ভুক্তভোগী শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অপসারণে হাইকোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়ে নারী-শিশুকে অনলাইনে সাইবার হয়রানি থেকে সুরক্ষিত রাখার জোর দাবী জানাচ্ছে সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন এন্ড চিলড্রেন প্ল্যাটফর্ম[1]
সাম্প্রতিক প্রকাশিত সংবাদ হতে জানা যায়, আজ ৯ মার্চ ২০২৫ তারিখ হাইকোর্ট কর্তৃক বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরিসি) কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিকভাবে মাগুরায় ধর্ষণের অপরাধের ভুক্তভোগী শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে অপসারণের আদেশকে স্বাগত জানাচ্ছে সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন এন্ড চিলড্রেন প্ল্যাটফর্ম। উল্লেখ্য, মাগুরায় ধর্ষণের অপরাধের ভুক্তভোগী শিশুর পক্ষে ব্যারিস্টার মাহসিব হোসাইন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনলে মাননীয় বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও মাননীয় বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ এ আদেশ প্রদান করেন।
নারী- শিশুসহ যেকোনো ধর্ষণের অপরাধের ভুক্তভোগী ব্যক্তির ছবি ও পরিচয় গোপন রাখা, যোগাযোগ মাধ্যমে নারী-শিশুসহ যেকোনো ব্যক্তির হয়রানিমূলক তথ্য ও ভিডিও অপসারণ, প্রযুক্তি-উদ্ভূত লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা (Technology-facilitated gender-based-violence) অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ও কার্যকর আইনি ব্যবস্থা নেয়া এবং নারী ও শিশুদের ব্যক্তিগত তথ্য -সুরক্ষার নিশ্চিতের জোর দাবি জানাচ্ছে সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন এন্ড চিলড্রেন প্ল্যাটফর্ম।
উল্লেখ্য বাংলাদেশে এখনো কোনো ব্যক্তিগত তথ্য-সুরক্ষার পরিকাঠামো না থাকায়, সাইবার আইনে প্রযুক্তি-উদ্ভূত লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাকে স্পষ্টভাবে উল্লেখ না করায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ধারা ১৪ এবং শিশু আইন, ২০১৩ এর ধারা ৮১ তে শিশু ভুক্তভোগীদের পরিচয় গোপন রাখার কথা উল্লেখ থাকলেও অনেকক্ষেত্রে তা লংঘিত হয়। তদুপরি, এসকল অপরাধের দোষীদের আইনের আওতায় আনার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। এ ধরনের সমস্যা নিরসনে সাইবার আইনে প্রযুক্তি-উদ্ভূত যৌন সহিংসতা অন্তর্ভুক্ত করা, ভুক্তভোগীর সংবেদনশীল এবং ব্যক্তিগত প্রমাণাদির যথাযথ গোপনীয়তা রক্ষা, ডিজিটাল ফরেনসিক সাক্ষ্য আমলে নেয়াকে বাধ্যতামূলক করা, পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ সংশোধন করা, , বিশেষ সাইবার ক্রাইম সেল গঠন, অনলাইন সহিংসতা সম্পর্কিত অভিযোগ সংবেদনশীলতার সাথে পরিচালনার জন্য বিচারব্যবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং পাঠ্যক্রমে ডিজিটাল সাক্ষরতা সম্পর্কিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছে সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন এন্ড চিলড্রেন প্ল্যাটফর্ম ।
প্রেক্ষাপট: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও ইউএন উইমেন বাংলাদেশের গবেষণা অনুযায়ী, দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মাত্র ২১.২৫% নারী। বাংলাদেশ পুলিশের সমীক্ষার ভিত্তিতে আইন ও সালিশ কেন্দ্র জানিয়েছে, ২০২১ সালে সাইবার অপরাধের ৭০% ভুক্তভোগী ছিলেন নারী। অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের গবেষণায় দেখা গেছে, ৬৪% নারী কখনো না কখনো অনলাইনে হয়রানি ও সহিংসতার শিকার হয়েছেন, যার মধ্যে ৮০% যৌন হয়রানিমূলক মন্তব্যের শিকার এবং ৫৩% ব্যক্তিগত ছবি বা অনৈতিক প্রস্তাবের মাধ্যমে হয়রানির শিকার হয়েছেন।
নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপদ ডিজিটাল পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে Cyber Support for Women and Children (CSWC) প্ল্যাটফর্ম ডিজিটাল স্বাক্ষরতা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। এটি প্রযুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ আইন প্রণয়ন, ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং সরকারি সেবা কাঠামো গঠনে ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি, নিরাপদ সাইবার জগত তৈরিতে **৭ দফা বাস্তবায়নের** জোর দাবি জানিয়েছে প্ল্যাটফর্মটি।
আরও তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন:
Cyber Support for Women and Children-CSWC এর আহ্বায়ক ও সচিবালয়ের পক্ষে
কমিউনিকেশন বিভাগ, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)
ই-মেইল: platform.vaw@gmail.com, communication@blast.org.bd । ফোন: +880 1861-275362
[1] সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন এন্ড চিলড্রেন প্ল্যাটফর্ম:
দেশে ইন্টারনেটের ব্যবহারের ফলে সাইবার জগতের অধিকার সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা ক্রমেই বাড়ছে। অনলাইনে সংঘটিত বিভিন্ন সহিংসতার মধ্যে নারী ও শিশু সম্পর্কিত ঘটনাগুলো স্পর্শকাতর এবং অনেক ভুক্তভোগী প্রতিরোধ বা প্রতিকারে পদক্ষেপ নিতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে সমন্বিতভাবে কাজ করতে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) উদ্যোগে সম্প্রতি ১৩টি সংগঠনের যৌথ প্লাটফর্ম গঠন হয়েছে। Cyber Support for Women and Children-CSWC নামে এই প্ল্যাটফর্ম নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় সম্মিলিতভাবে কাজ করবে। আসুন – “সাইবার সুরক্ষায় সচেতনতা গড়ি, নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করি”
প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), যুগ্ম আহ্বায়ক সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়্যারনেস ফাউন্ডেশন (সিক্যাফ) এবং সদস্য সচিব নারীপক্ষ। এছাড়া আরও ১০টি সদস্য সংগঠনের মধ্যে আছে-অরোধ্য ফাউন্ডেশন, আর্টিকেল নাইনটিন, ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেটিক্স অ্যান্ড ডেভলাপম্যান্ট (আই.আই.ডি), দ্যা টেক অ্যাকাডেমি, ব্র্যাক, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম (বিআইজিএফ), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, সাইবার টিনস, ডিজিটালি রাইট লিমিটেড ও হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)।