২৭ আগস্ট ২০২৫
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবারের মাঝে সঞ্চয়পত্রের অর্থ এবং মাসিক ভাতা বণ্টনের সুস্পষ্ট প্রক্রিয়া উল্লেখপূর্বক ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন বিধিমালা, ২০২৫’ জারি করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে আন্তরিক সাধুবাদ জানাচ্ছে ব্লাস্ট।
একইসাথে, এ বিধিমালার ১৫ নং বিধিতে উল্লেখিত বিধান তথা- জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের স্বামী বা স্ত্রীর পুনরায় বিবাহজনিত কারণে তাদের জন্যে বরাদ্দকৃত মাসিক অনুদান বা ভাতার অবসান ঘটবে এবং এ অবসানকৃত অংশ পরবর্তীতে শহিদ পরিবারের অন্য কোনো সদস্য দাবি করার বা পাবার অধিকারি হবেন না। সমতা, ন্যায্যতা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার পরিপন্থী এ বিধানটি অনতিবিলম্বে বাতিলের আহ্বান জানাচ্ছে ব্লাস্ট। এক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, ইতোপূর্বে রানা প্লাজা ধসের বিপর্যয়ে নিহত শ্রমিকদের স্বামী বা স্ত্রীর জন্যে বরাদ্দকৃত আর্থিক অনুদান; তাদের পুনরায় বিবাহজনিত কারণে অবসানের কোনো বিধান ছিলো না।
প্রেক্ষাপট:
ইতোপূর্বে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন হতে জানা যায় যে, আর্থিক সহায়তার এ অর্থ বণ্টনের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে উত্তরাধিকার আইন অনুসরণ করা হচ্ছে। অযৌক্তিক এ বণ্টন প্রক্রিয়ায় তীব্র উৎকণ্ঠা প্রকাশ পূর্বক জুলাই শহিদদের স্ত্রীরা ব্লাস্ট কে অবগত করেন যে, উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী সঞ্চয়পত্রের অর্থ বণ্টনের কারণে তাদের নিজেদের ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মাঝে পড়ে যাবে।
পরবর্তীতে গত ৮ আগস্ট ২০২৫ তারিখ ব্লাস্ট আর্থিক সহায়তার বণ্টন প্রক্রিয়ায় উত্তরাধিকার আইন অনুসরণ বিষয়ে জুলাই শহিদদের স্ত্রীদের আপত্তিসহ আরো বেশ কিছু উদ্বেগের বিষয় উল্লেখপূর্বক একটি স্মারকলিপি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় বরাবর প্রেরণ করে। এ স্মারকলিপির অন্যতম মূল প্রতিপাদ্য বিষয়ই ছিল- অযৌক্তিকভাবে উত্তরাধিকার আইন অনুসরণ না করে; সমতা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে একটি অভিন্ন, ন্যায়সঙ্গত, বৈষম্যহীন পৃথক নীতিমালা প্রণয়ন এবং তা অনুসরণ করে আর্থিক সহায়তার অর্থের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা। ব্লাস্টের উত্থাপিত এ বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে দ্রুততার সহিত এ বিধিমালাটি প্রণয়নের জন্যে এ মন্ত্রণালয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে ব্লাস্ট।
উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক পদক্ষেপ:
এ বিধিমালার বিধি ১৯ (৪) ও তফসিল ৩ এ উল্লেখ করা হয়েছে যে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তরের পক্ষ হতে জুলাই শহিদ পরিবার ও যোদ্ধাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ফ্রিল্যান্সিং, মোবাইল সার্ভিসিং, বস্ত্রশিল্প, কৃষি, গবাদিপশুপালন, মৎস্য চাষ এবং পোল্ট্রি ফার্মিং সহ আরো বিভিন্ন ধরণের উপার্জনমুখী কর্মকাণ্ডের বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হবে- যা বাস্তবিক অর্থেই একটি কার্যকরী পদক্ষেপ। এছাড়া এ বিধিমালায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে, উপার্জনমুখী কাজ বা আত্মকর্মসংস্থানের জন্য সহজ শর্তে ঋণ বা এমন সুবিধাদি দিতে অধিদপ্তর উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারবে। মন্ত্রণালয়ের এ ধরণের উদ্যোগ জুলাই শহীদ পরিবার ও যোদ্ধাদের পুনর্বাসনে বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি।
পাশাপাশি, এ বিধিমালায় ২১ নং বিধিতে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বা সংশ্লিষ্ট বিধিমালার বিধান অনুযায়ী প্রদত্ত আর্থিক সহায়তা বা চিকিৎসা সহায়তা বা পুনর্বাসন বিষয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে কোনো বিরোধ সৃষ্টি হলে তা আপোষ-মীমাংসার লক্ষ্যে একটি সালিশ বোর্ড গঠনের উল্লেখ করা হয়েছে। এবং সালিশ বোর্ডের সিদ্ধান্তের সংক্ষুব্ধ ব্যাক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আপিল করতে পারবে মর্মে উল্লেখ রয়েছে। তবে, এ সালিশ প্রক্রিয়ায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ করার লক্ষ্যে সালিশ বোর্ডের সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা অর্থাৎ নারী ও পুরুষের সমান প্রতিনিধিত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবী জানাচ্ছে ব্লাস্ট।
বার্তা প্রেরক:
কমিউনিকেশন বিভাগ, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)
ই-মেইল: communication@blast.org.bd