১৩ আগস্ট ২০২৫

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা ও পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছে ব্লাস্ট

BLAST Demands Action for Justice, Accountability, and Compensation for Victims of Road Crashes

আজ ব্লাস্ট গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছে চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ, এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশফাক মুনীর মিশুকসহ তাদের তিন সহকর্মীকে, যারা ১৪ বছর আগে মানিকগঞ্জে এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন।

এ উপলক্ষে অবহেলার কারণে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, দ্রুত ও পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ এবং কার্যকর বীমা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে ব্লাস্ট।

বিশেষত, ব্লাস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এ নিম্নলিখিত পরিবর্তন করার আহ্বান জানাচ্ছে:

1. সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য দ্রুত ও পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ: সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ দ্বারা গঠিত ক্ষতিপূরণ তহবিল সক্রিয় নয় এবং ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ বা প্রদানের জন্য কোনও মানদণ্ড বা প্রক্রিয়া কার্যকর নয়।

2. যানবাহনের জন্য বাধ্যতামূলক বীমা: অবহেলার কারণে সৃষ্ট সড়ক দুর্ঘটনাকে মানবিক বিপর্যয় হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। বাধ্যতামূলক এবং সমন্বিত যাত্রী বীমা (জলপথ, সড়ক এবং বিমান পথের আওতাভুক্ত) চালু করা উচিত, ক্ষতিগ্রস্থদের হারিয়ে যাওয়া কর্মক্ষম সময়সীমা, মৃত্যুর কারণে নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যদের মানসিক ও শারীরিক ক্ষয়ক্ষতি ও দুর্ভোগ এবং দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক ক্ষতি তাদের উন্নতি ও কল্যাণকে প্রভাবিত করে।

চলচ্চিত্র নির্মাতা, ২০১১ সালের দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া এবং সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক প্রচারক ক্যাথরিন মাসুদ বলেন, ‘২০১৭ সাল থেকে আমাদের ক্ষতিপূরণের মামলা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় আছে। এই ঘটনা একটি সার্বিক বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে। ২০১৮ সালে সড়ক নিরাপত্তার জন্য শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর প্রণীত সড়ক পরিবহন আইনটি ছিল আংশিক এবং অপর্যাপ্ত। সেখানে জবাবদিহিতা, তদারকি ও কার্যকর প্রয়োগ ব্যবস্থার অভাব ছিল। এমনকি কোন রকম বিকল্প ব্যবস্থা না করে, পূর্ববর্তী আইনে বিদ্যমান সিমিত জবাবদিহিতাও অপসরণ করা হয়েছিল। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাক্তিদের জন্য অনুদান নয়, ক্ষতিপূরণ প্রয়োজন। চালক, পরিবহন কম্পানি এবং বীমা প্রদানকারী সকলের জবাবদিহি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। প্রকৃত সংস্কার এবং নিরাপত্তা তখনই সম্ভব হবে যখন আর্থিকভাবে দায়বদ্ধ করা হবে। এখনই সময় আমাদের সকলের জন্য নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার।

প্রেক্ষাপট:

২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মারা যান তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর। তাঁদের বহনকারী মাইক্রোবাসটির সঙ্গে চুয়াডাঙ্গাগামী একটি বাসের (চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্স) সংঘর্ষ হয়।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে তারেক মাসুদের পরিবারের করা ক্ষতিপূরণ মামলায় হাইকোর্টের দেয়া যুগান্তকারী রায়ের বিরুদ্ধে বাসের মালিকপক্ষ এবং বাদীপক্ষের দায়ের করা পৃথক আপিল মামলা শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় অপেক্ষমান রয়েছে। অন্যদিকে মিশুক মুনীরের পরিবারের দায়ের করা ক্ষতিপূরণ মামলাটিতে বিবাদীপক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য হাইকোর্টে ১৬ আগস্ট দিন ধার্য রয়েছে। একই দুর্ঘটনায় আহত শিল্পী ঢালী আল মামুন রাষ্ট্রের সহযোগিতায় বিশেষ চিকিৎসা পেয়েছেন।

উল্লেখ্য, এ দুর্ঘটনার পরপর ১৪ আগস্ট ২০১১ তারিখে আইনজীবী জেড আই খান পান্না, বেলা এবং দুইজন আইনজীবী সড়ক এবং হাইওয়েতে নিরাপদ চলাচলে নিয়মিত তদারকি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়বদ্ধতা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতের লক্ষ্যে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা (৭৪০১/২০১১) দায়ের করে। আবেদনকারীগণের পক্ষে বর্তমানে ব্লাস্ট এ মামলাটি পরিচালনা করছে, যা বর্তমানে শুনানীর জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে।

বার্তা প্রেরক:

কমিউনিকেশন বিভাগ, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)

ই-মেইল: communication@blast.org.bd

মিডিয়া কভারেজ:

১) সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য অনুদান নয়, ক্ষতিপূরণ প্রয়োজন: ক্যাথরিন মাসুদ (ইন্ডিপেন্ডেন্ট নিউজ)

২) সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি ব্লাস্টের (পাব্লিকহেলথ২৪ ডট কম)

৩) সড়কে অবহেলাজনিত দুর্ঘটনা: ক্ষতিপূরণের জন্য তহবিল গঠনের দাবি (জাগো নিউজ ২৪ ডট কম)